নিবিষ্টতাই আলোক সরকারের স্বর সুমন গুণ নিঃশব্দের ভাষায় যাঁরা কবিতা লিখেছেন, বাংলায়, এখনও পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে সবার আগে মনে আসে আলোক সরকারের নাম। কোনও কিছু হয়ে ওঠা নয়, না-হয়ে ওঠাও নয় তাঁর কবিতা। বিশুদ্ধ শব্দটির নানারকম ছায়া আছে, জটিলতা আছে, অর্থান্তর আছে। কিন্তু এই শব্দটি আলোক সরকারের কবিতার সঙ্গে কত তর্কাতীতভাবে মানিয়ে যায়! অন্য কোনও কবি, এমনকি জীবনানন্দ প্রসঙ্গেও বিশুদ্ধতার ধারণাটি এমন সমতলভাবে স্মরণীয় মনে হয় না। এখানে আলোক সরকারের সেই সুখ্যাত কথাটি মনে পড়বে : বন্যায় যে বিপর্যয় হয়, তার বিবরণ দেয় খবরের কাগজ; আর এই বিপর্যয়ে আমার মনখার…
ভাল দিন আমরা বানিয়ে নেব তড়িৎ রায়চৌধুরী আমরা যখন টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখা শুরু করি তখন ভেঙ্কসরকারদের পালা শেষ করে রবি শাস্ত্রীরা আসছেন। ব্যাটসম্যান জোরে হিট করলে শর্টের ফিল্ডার হেঁকে দিতেন, আর বাউন্ডারি লাইনের ফিল্ডার অপেক্ষা করতে, বল কাছে আসবে বলে। তারপর হাঁটু মুড়ে বসে, বল ধর্ দু’বার টিপ করে, ছুঁড়ে দিতেন। ক্রমে দিন বদলালো। চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ল। পোশাক রঙিন হল। এখন আর কেউ অপেক্ষা করে না। ছুটে এসে চলন্ত বলকেই তুলে ছুঁড়ে দেয় উইকেটের দিকে। খেলা বদলে গেছে। দুনিয়া এখন বিশ্বাস করে, টান মারো খেলা ঘুরবে। করোনার প্রথম হল, দ্বিতীয় হল, শোনা যাচ্ছে মাস দ…
বেঁচে থাকার মতোই বেপরোয়া তাঁর কবিতা সুমন গুণ বাংলা কবিতায় নির্মলেন্দু গুণের একটি স্পষ্ট আর প্রকাশ্য অবস্থান আছে। সহজ কথা সরাসরি বলার মধ্যে অনেক ঝুঁকি থাকে। সারা পৃথিবীতেই সহজে লক্ষ্যভেদী বহু কবিতা লেখা হয়েছে, বাংলাতেও সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অরুণকুমার সরকার থেকে শুরু করে এই সময় পর্যন্ত এমন অনেক কবির লেখাই আমরা পড়েছি, কৌণিক কোনও ধরন না রেখেও যাঁরা সফল হতে পেরেছেন। নির্মলেন্দু গুণ এই ঘরানার, সম্ভবত, জনপ্রিয়তম কবি। 'সুন্দর এসে থেমে আছে তার নাসিকার শেষ প্রান্তে নাকপাশা যেন সোনা দিয়ে মোড়া ঘুঘু চোখ ঘুমে বুঁদ, অথবা শীতের পিঁপড়ের মুখে আলতা মাখানো খুদ।…
প্রতীক্ষায় জীবন বাজি রাখতে পারি সুশোভন অধিকারী আষাঢ়ের প্রথম দিন। অফিসিয়ালি বর্ষার শুরু হল বুঝি। সেই কবে কালিদাসের যুগে বিরহী যক্ষ তার প্রিয়ের উদ্দেশে মেঘকে দূত করে খবর পাঠিয়েছিল। সেই আর্তি বোধহয় এখনও আকাশে ভেসে বেড়ায়। তবে আজ তার কাজ ফুরিয়েছে। বর্ষার মেঘ সরিয়ে জায়গা নিয়েছিল মরাল কপোতের মতো পাখি-পাখালির দল, তাদেরও রোমান্টিক পর্ব পেরিয়ে এখন ডাকবিভাগ ছাড়িয়ে কুরিয়ার সার্ভিস। আজ তাও নয়, ই-মেইল, মেসেজ, হোয়াটস-আপে বার্তার ছড়াছড়ি। এখন আর অপেক্ষা করতে হয় না আমাদের, খবর পাঠানোর পরেই ঠিন করে ঘণ্টি বাজিয়ে উত্তর এসে পড়ে। বড় দ্রুত, বড় চটজলদি। প্রাপকের সেই …
হেমন্ত শ্রোতাদের বশ করে রাখতেন সুমন গুণ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বাংলা আধুনিক গানের সেই পর্বের কুশীলব, যখন কথা নয়, সুর আর গায়কীর দাপট গ্রাস করে নিয়েছে শ্রোতাকে। অন্য কিছু নিয়ে ভাবার মুহূর্তই তৈরি হত না। হেমন্ত শ্রোতাদের বশ করে রাখতে পারতেন, উত্তমকুমার যেভাবে রাখতেন দর্শকদের। ফলে ‘এই বালুকাবেলায় আমি লিখেছিনু...’ বা ‘জানিতে যদি গো তুমি, পাষানে কী ব্যথা আছে, গোপন বাণীটি তারই, তোমার পরশ যাচে...’ জাতীয় গানের কথা আদৌ কিছু বলছে কিনা সেদিকে আমাদের মন জাগ্রতই হল না। বাংলা গান যে কবিতার হাত যোগ্যতার সঙ্গে ধরে রাখতে পারল না, তার একটাই কারণ। রবীন্দ্রনাথ বা তাঁর…
খেলা শেষ, ঝড় আসছে তড়িৎ রায়চৌধুরী আমি যখন লিখতে বসেছি তখনি আকাশ গোমড়াথোরিয়াম। আপনার পড়ার সময় নিশ্চয় ‘খেলা’ হয়ে গেছে ‘ইয়াস’ ওরফে ‘যশ’-এর! অথবা, জানলার বাইরে চোখ রেখে বলছেন— খেলা শেষ, ঝড় আসছে! ওমানের দেওয়া এই পার্সি নামের কথায় মনে পড়ল ঘূর্নিঝড়ের নামকরণ বৃত্তান্ত। ইতিহাসটি ভারি মজার। একসময় বিজ্ঞানীরা ঝড়কে ডাকতেন ভৌগোলিক জন্মস্থান দিয়ে; মানে ৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৭২ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশ-এর ঝড়...; ফলে সাধারণ মানুষ ডাকনাম দিত স্থানীয় মর্জিতে। সন্ত, সাল, ক্ষতিগ্রস্ত স্থান-এর নাম যোগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অব্দি এই রকম চলে। ক্রমে পশ্চিমা আবহবিদর…
দুই ভ্যাকসিনের দূরত্ব যেন ইলাস্টিক তড়িৎ রায়চৌধুরী “এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার। ওকি পাখির কুজন নাকি হাহাকার”। সকালে মেসেজ টোন শুনলেই বুক কেঁপে ওঠে। এক তো নয় কোনও কোনও দিন একাধিক খবর। যেন কনসেন্ট্রেশান ক্যাম্পে কাটছে দিন। তফাত একটাই, আজও আমরা ভুলিনি নাৎসী অত্যাচার। সেই আতঙ্ক প্রভাবশালী সারা বিশ্বে। কিন্তু এই সব দিনগুলি রাতগুলি সহজেই আমাদের ভুলিয়ে দেবে দক্ষ রাজনীতির কারিগরেরা। গতবার দেশে হঠাৎ ডাকা লকডাউনে যারা সোচ্চার ছিলেন শ্রমিকদের জন্য তারাই এবার রাজ্যের হঠকারিতায় সাফাই গাইছেন। ভোট মিটেছে, ঈদ গেছে এবার করাই যায় বন্ধ। আর বিজ্ঞানও তো আজকা…
আপনি আত্মনির্ভর দেশের বাসিন্দা তড়িৎ রায়চৌধুরী অবশেষে বঙ্গের ভোট ভাঙল। গড় ভাঙার পর এখন ঘর-বাড়ি ভাঙার পালা। তাও দল ভাঙার খেলাটা আগে হয়ে গেছে এবার। ছোট-বড় মিলে ভোট পাঁচ বছরে তিন বার তো হয়-ই; তবে এর ব্যাকরণ খুব বদলায় না। “রাজা আসে যায় রাজা বদলায়/ নীল জামা গায় লাল জামা গায়/ জামা কাপড়ের রঙ বদলায়/ দিন বদলায় না”। কি আশ্চর্য! কবি কি জানতেন লালের পর নীল জামা পড়বে প্রশাসক! কবিরা নাকি দূরদ্রষ্টা হন। উন্নয়নের খড়গ-ই কিভাবে বর্গি বিতাড়নের হাতিয়ার হয়ে উঠবে তাও কি দেখতে পেয়েছিলেন কবি? ইহলোক আজ নিরুত্তর। তবে বহিঃশত্রুর নামে জোটবদ্ধ হবার রীতি তো নতুন না। দেশের ক…
মৃত্যুর ফেরেশতা দ্যুতিমান ভট্টাচার্য ইয়োসেফ ম্যাঙ্গেলার (Dr. Josef Mengele) জন্ম ১৯১১ সালের ১৬ মার্চ জার্মানির বাভারিয়ার গুঞ্জবার্গে। কার্ল ও ওয়েলবুর্গা ম্যাঙ্গেলার তিন সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ইয়োসেফের অন্য দুই ভাই কার্ল জুনিয়র এবং এলোইস। কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি উৎপাদন করতেন তাঁর পিতা। ইয়োসেফ ১৯৩০ সালের এপ্রিল মাসে স্কুলের পাঠ চুকিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যটে (Goethe) বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখে যথাক্রমে মেডিসিন এবং দর্শন নিয়ে পড়তে চলে যান। ১৯৩৫ সালে ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখ থেকেই নৃবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করেন এবং ১৯৩৭ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টের ই…
একই অধিকার, একটি ভোট তড়িৎ রায়চৌধুরী ‘‘তুমি যদি চুরি করো, কে তোমার করিবে বিচার?’’ সহস্র বৎসরের সনাতন রীতি যাকে বিশ্বমাতা বলে এসেছে। একা ভিখারিনী অপর্ণা তাকে বলে রাক্ষসী। শেষপর্যন্ত রাজা থেকে পুরোহিত সকলেই একমত হয় তার সঙ্গে। মৃত্যু ব্যবসার মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা বিসর্জিত হয়। কিন্তু সে তো নাটকে! বাস্তবে? লকডাউনের বার্ষিকী পালন হয়ে গেছে। ফিরে ফিরেই নতুন সে। নবরূপে গত বছরের সকল ত্রুটি সংশোধন করে ফিরেছে কিন্তু লকডাউন ফেরেনি রাজ্যে। কেন না, সেদিন তুমি রাস্তায় চা খেতে বেরিয়েছিলে। আজ রাজা নেমেছেন ভোট কুড়োতে। তাই যতই উর্দ্ধমুখী হোক গ্রাফ, এখন…
চৈত্র সেল মৌমন মিত্র লিটিল রাসেল স্ট্রিটের অফিস থেকে একটা ট্যাক্সি ধরে সোজা গড়িয়াহাটের মঞ্জুষা বুটিক পৌঁছে গেছি। সেখানে আকাশি নীল সাইড স্লিটেড হাইনেক কুর্তা, থরে থরে গাঢ় নীলের উপর লাল ও সাদা সুতোর উইভ করা শাড়ি। তার পাশে অভিনব কাট ও স্টাইলের ব্লাউজের বিভিন্ন কালেকশন। একদিকে নজর কাড়ছে নেক লাইনের উইভিং, অন্যদিকে কটন ফ্যাব্রিকের উপর অলওভার এমব্রয়ডার্ড ধবধবে সাদা আংরাখার ফ্যাশান। সময়টা চৈত্রের পড়ন্ত বিকেল। রোদের তাপে পুড়ে যাচ্ছে কলকাতা শহর। চারপাশে চৈত্র সেল। ভিড়ে ঠাসা ফুটপাথের ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে, মানুষ কাটাতে কাটাতে সস্তা কানের দুলের নতুন স…
অপারেশন ফিনালে দ্যুতিমান ভট্টাচার্য হিব্রু ভাষায় ‘মোসাদ’ শব্দের অর্থ ‘ইনস্টিটিউট’ বা প্রতিষ্ঠান। আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের এই গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘দ্য ইনস্টিটিউট ফর ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশন্স’। মোসাদকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। একে ঘিরে সবচেয়ে বেশি রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর গল্প চালু আছে। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যুর পর বিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নের প্রকল্পে শামিল হয়েছিল। ইহুদি, খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের কাছে ‘পবিত্র ভূমি’ বলে পরিচিত বৃ…
আনন্দ ফিরে আসবে, আসবেই মৌমন মিত্র সপ্তাহ তিনেক আগে প্রায় সাত মাস পর দূরে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। মুখোশ, দৈহিক দূরত্ব বজায় রেখে, আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মুখোমুখি হলাম ভয়ঙ্কর এক পথ দুর্ঘটনার। গাড়িতে স্বামী, সন্তান, সকলেই উপস্থিত ছিল। দুর্ঘটনায় গাড়ির এয়ার ব্যাগ খুলে আমার ডান হাতে চোট পেলাম। বাকিরা সামান্য আহত হয়েছিল ঠিকই, তবে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। কাজের পরিমাণ বাড়লে আমার হাতের যন্ত্রণা এখনও বেশ জানান দেয়। সে আছে। আবার ঠিকও হয়ে যায়। এক কথায় আমরা সকলে শারীরিক ভাবে আরোগ্যলাভ করেছি। কিন্তু মনের কোথাও সেই আকস্মিক শক এখনো বাসা বেঁধে আছে…
পুজো বিক্রি অনলাইনে তড়িৎ রায় চৌধুরী শান্তিনিকেতনে মহালয়ার দিন বিকালে কয়েকঘণ্টার একটা মেলা হয়। আনন্দ বাজার। শুরুর দিকে এর অন্য আরেকটা নাম পাওয়া যায় ‘বউ ঠাকুরানীর হাট’। আশ্রমের মহিলারা করেছিলেন বলেই হয়তো এই নাম। ঠিক জানি না। তবে এটা জানি হাট-বাজার এসব শব্দ সুশীল বাঙালি সমাজ তেমন ভালোবাসে না। কেমন ব্যবসা ব্যবসা গন্ধ, বেচাকেনার ভাব। অনেকে তাই মুখ চলতি বলেন আনন্দমেলা। মেলা মানে মিলন— আহা কি ভাল! কি ভাল! আচ্ছা ব্যবসায় দোষ কি? ‘‘বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী”। তো লক্ষ্মী তো বাঙালির ঘরে ঘরে পূজিতা। ঠাকুর পরিবারের সকল পুষ্টির মূলেই ছিল ব্যবসা। তাই তাদের…
কমিউনিফেকিং তড়িৎ রায় চৌধুরী ফেসবুক নিরপেক্ষ নয়। সে বিদ্বেষ বিষ ছড়ায়—আমেরিকান পত্রিকার এই রিপোর্ট লটঘট লাগিয়ে দিল ভারতীয় সংসদেও। তা লাগুক। তাদের অনেক প্যাঁচ পয়জার ঘেঁটে চলতে হয়। ভোটের অঙ্ক কষে ইস্যু সাজাতে হয়। কিন্তু আপনি, আমি? যারা দেয়ালে রীতিমত বিজ্ঞাপন দিয়ে বন্ধু-বিচ্ছেদ যজ্ঞ করি, আমার না-পসন্দ কে রাখতে চাই না আমার পৃথিবীতে, তারা কি ভুলেই থাকব যে আমরা নিজেরাই খোলা মাঠে আত্মবিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড টাঙানোর গল্পে আছি। ফাঁকা মাঠ ততক্ষণই খোলা থাকে যতক্ষণ মালিক তা চায়। যে ছেলেটি জয়সিংহের মতো আকস্মিক আবিষ্কার করেছে রঘুপতি নিরপেক্ষ নয় ততখানি,সে কি জানত …
পিছিয়ে পড়েছে সনাতন শিক্ষক ভাবনা তড়িৎ রায় চৌধুরী ‘শিক্ষক দিবস’ কি পৃথিবীতে একটাই? এক সময় আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি ছিল গুরু-পূর্ণিমা। আধ্যাত্মিক ও প্রাতিষ্ঠানিক গুরুদের মঙ্গল কামনার দিন। উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ তাঁর জন্মদিন পালনে উৎসাহী ছাত্রদের জানালেন নিছক একজনের জন্য নয় দিনটি পালিত হোক এক সম্প্রদায়ের স্মরণে। তাই ৫ সেপ্টেম্বর হল ভারতের ‘শিক্ষক দিবস’। আরও পরে ১৯৯৪ সালে এডুকেশন ইন্টারন্যাশানাল এর প্রস্তাবে ইউনেস্কো ৫ অক্টোবরকে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ এর স্বীকৃতি দেয়। একশোর উপর দেশ এটাই মানে। এত কথা আমরা মনে রাখিনি।…
আড্ডার ঐতিহ্য তৈরি করেছিলাম সুমন গুণ অস্কার ওয়াইল্ডের সঙ্গে প্যারিসের কাফে ডি ফ্লোর, আনা আখমাতোভার সঙ্গে পিটার্সবাগের স্ট্রে ডগ কাফে, এখানকারই দ্য লিটারারি কাফের সঙ্গে ডস্টয়েভস্কি বা পুশকিনের উষ্ণ যোগাযোগের কথা আমরা জানি, জানি হেমিংওয়ের সঙ্গে প্যারিসের অনেক কাফের টইটম্বুর সম্পর্কের কথাও, তাঁর নানা লেখায় জায়গা পেয়েছে এইসব কফিশপ। আখমাতোভা নিয়মিত কাফেতে বন্ধুদের সঙ্গে কবিতা পড়তেন। কাফে ডি ফ্লোর অনেকদিন থেকেই তরুণ লেখকদের জন্য পুরস্কারও চালু করেছে। প্যারিসের লে ডো মাগো ধারণ করেছিল শুধু হেমিংওয়ে নয়, বোভেয়ার-সার্ত্র, পিকাসোকেও। এখানকার কফিতে আমিও চ…
প্রাচীর মহাকাব্যিক সংঘাতের উপাদান তড়িৎ রায়চৌধুরী সা ধারণ ইংরাজিতে বলি ওয়াল। কিন্তু প্রাচীর আর দেওয়াল কি এক আমার কানের কাছে? ‘আরণ্যক’-এ ছিল নিশানদিহি খাম্বা—শুনলেই কেমন লাগে। প্রাচীরও কি তেমন কিছু? তুলনায় দেয়াল একটু নরম। “ইঁট সাজিয়ে ইঁটের উপর/ খেয়াল মতো দেয়াল তুলি গড়ে।’’ আরও নরম শব্দ বোধহয় বেড়া। বেড়া মানে কি ব্যারিকেড? কমরেড গড়ে তোল ব্যারিকেড। সে ব্যারিকেড মানে কি মানব প্রাচীর? মহাভারতের চক্রব্যূহ কি এই রকমই কিছু? মানব প্রাচীর তো জীবন্ত? যেমন জীবন্ত প্রাচীর দেখেছি গুল্ম বা বীরুতের। টগর, নিশিন্দা, জবা, ঢোল কলমি এমন কত কিছু ঘিরে রাখত সব্জি বা ফুল…
উড়ানে স্ব-অধীন চেতনা মৌমন মিত্র আ মেরিকায় খুব সুস্বাদু একটি মিষ্টি পাওয়া যায়। যার নাম ডো-নাট। অধিকাংশ আমেরিকান সকালে প্রাতরাশ করে এই ডো- নাট দিয়ে। সঙ্গে এক কাপ কফি, গাড়িতে পডকাস্ট শুনতে শুনতে অফিস পৌঁছে যাওয়া। এ হল এই দেশের প্রাতঃকালের একটা খুব চেনা চিত্র। হ্যাঁ, করোনার আগে সেই নানা রঙে দিনগুলিতে। এখন কোনও চিত্রই পরিচিত না। এখন নব্য স্বাভাবিকতন্ত্র নব্য চেতনার যুগ। এই ডো-নাটের একটি বিখ্যাত বিক্রেতা চেন হচ্ছে ডানকিন। ডানকিন কোম্পানি আমেরিকার একটি বহুজাতিক কফি এবং ডো-নাট কোম্পানি। টেলিভিশান পর্দায় এই কোম্পানির একটি অতি-বিখ্যাত বিজ্ঞাপন চলে। ‘A…
সংযোগ