খেলা হচ্ছে, খেলছি আমরা আবীর মুখোপাধ্যায় খেলা হল স্যার? ম্যাডাম... কেমন খেললেন? কমরেড, আপনি? গত ২৪ ঘণ্টায় আমার দেশে আক্রান্ত ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার, সক্রিয় রোগী ছাড়াল সাড়ে ৩১ লক্ষ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৮ জনের! কী অসাধারণ— মোক্ষম খেলেছেন। খেলা কী শেষ? কী খেললেন বলুন তো— বিশ্বের সব দলের, সব খেলার রেকর্ড ভেঙে তছনছিয়া ভারত! সকল দেশের সেরা! সংক্রমণে বেলাগাম আমার দেশ! কী জানেন, একটার পর একটা খারাপ খবরের ফিড দেখতে দেখতে, প্রিয়জন হারাতে হারাতে এখনও কানে বাজছে, আপনাদের দামাল শ্লোগানের সেই কোরাস— ‘‘খেলা হবে, খেলা হবে।’’ এই তো, এই ক’দিন আ…
দুয়ারে রব একা আবীর মুখোপাধ্যায় বিকেলের পর কাল রাতেও কখন যে, ঘুমের মধ্যে, বৃষ্টি হয়ে গেছে— টের পাইনি! ঘুম-ভাঙা মেঘমান ভোরে দেখি, শান্তিনিকেতনের সারা পথ ও পল্লিজুড়ে বৃষ্টির সুবাস। প্রতিটি গাছের নীচে কী অপূর্ব আলপনায় ছড়িয়ে রয়েছে রঙিন ফুল-পাতার মিতালি। মেঘ ছুঁয়ে মিঠে রোদ যেন মায়া-রং ছড়িয়ে দিচ্ছে। বসন্তে এমন বৃষ্টি প্রতিবার আমাকে এক অলৌকিক স্পর্শে জাগায়। আর্তরবে বলিয়ে নেয়, ‘‘শুধু এবারের মতো/ বসন্তের ফুল যত/ যাব মোরা দুজনে কুড়াতে।/ তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারম্বার,/ তাহারি একটি শুধু মাগি আমি দুয়ারে তোমার।’’ শাল, পলাশ, শিমুলের বন অবশ্য জানে, ‘‘ফ…
করোনা ক্লান্ত সময়ে দাঁড়িয়ে ব্লগার ডটকমেই আমাদের ই-ভার্সানে এসেছিল। অগণিত পাঠকের বিশ্বাস আমাদের মূলধন। আপাতত, আমাদের পুরনো পত্রিকার নির্বাচিত লেখা কেবল নয়, এই ই-ভার্সানে অজস্র নতুন লেখা জায়গা করে নিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে নতুন কয়েকটি বিভাগও শুরু হয়েছে। লেখা পাঠান আগের মতোই। এখন আর মাসিক নয়, নিত্য মাউসের ক্লিকে ঘরে বসেই পড়তে পারবেন ‘এখন শান্তিনিকেতন।’ সঙ্গে ভিডিও— ভিডিও দেখুন—
সাত দিন সাত রঙ কবিতা, ছোট গল্প, প্রবন্ধ, ধারাবাহিক, সাক্ষাৎকার, ব্লগ, ভিডিও, রম্যরচনা, ফিচার, ভ্রমণ, সিনেমা, চিত্রকলা, সংগীত এখন থেকে প্রতিদিন
সব হতে দূর আবীর মুখোপাধ্যায় । ১০ জুন, ২০২০ । শান্তিনিকেতন ল কডাউনের বাজারে জোর করে এই লেখা। ‘জোর’ কথাটা খুব সংগত কারণেই লিখলাম। কেন না, বিশ্বভারতী অথবা শান্তিনিকেতন নিয়ে নিজের অনুভবের কিছু লেখায় এখন আর মন সরে না আমার। দু’দশক সাংবাদিকতার সূত্রে, ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজন উপাচার্য ও বিশ্বভারতীর অন্দরমহলকে খানিকটা জানার সুবাদে, লেখার কথা এলে, নিভৃতে নিজেকে শুধাই, কাদের নিয়ে লিখব? কার কথা লিখব? কেন লিখব? এ কথা সত্যি, এখন খুব দরকার না থাকলে শান্তিনিকেতনে যান না কেউ কেউ! তাঁদের যুক্তি, রবিঠাকুর না পড়া-না জানা, মহর্ষিদেব ও রবীন্দ্রে…
ভোটার তালিকা ছোট হয়ে যাবে নাতো আবীর মুখোপাধ্যায় ধূপ-ধুনোর ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চতুর্দিক। চণ্ডীতলার থান, গাছপালা, বনবাদাড়— আকাশ— চরাচর। সুগন্ধে মাতোয়ারা পুজোতলায়, ভিড়ের জনতা অদৃশ্য মন্ত্রে যেন থমকে গিয়েছে! জোড় হাত করে মিটমিটিয়ে চেয়ে সবাই। চারিদিক সুকঠোর নিস্তব্ধতা, ফিসফিসিয়ে কথা বলাও বারণ! কেবল থেকে থেকে পুরোতমশাই তারস্বরে চিৎকার করছেন— ‘মা, মা—দেখিস মা!’ এই বলতে বলতেই ঠাকুরের মাথা থেকে টুপ করে একটি পদ্মফুল গড়িয়ে পড়ল। আর অমনি বেজে উঠল ঢাক-ঢোল। সমস্বরে ভক্তকূলের জয়রব! অশ্রুসজল চোখে সিঁদুর লাগানো ফুল-বেলপাতা মায়ের শ্রীচরণ থেকে তুলে ভক…
কার লেখা, কার নাম আবীর মুখোপাধ্যায় বাঙালি আর কোনওদিন শোধরাবে না! ভাল লেখা পেলেই হাত নিসপিস করে। কেউ নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। কেউ সংগৃহীত লিখে মেরে দিচ্ছেন। কেন উল্লেখ করবেন না? লজ্জা লাগছে অন্যের লেখার প্রশংসা করতে? পারবেন, করোনা নিরাময়ে কোনও অ্যান্টিডটের নাম নিজের সঙ্গে জড়াতে? কঠিন কাজ— তাই অতি সহজেই লেখক হতেই হবে আপনাকে? তাই না? কেন আপনি তো ভাল পিয়ানো বাজাতে পারেন— পারেন না? নাচতে পারেন? নাচুন না। কত্থক? তেরে কেটে ধা তেরে কেটে ধা তা ধিন ধিন তা! নাচুন! আচ্ছা কয়েকদিন রবীন্দ্রনাথের গান না করে একটু মল্লারের কোনও বন্দিশ আথবা কীর্তন শো…
রোমান্স ভুলছি কমিউনিফেকে আবীর মুখোপাধ্যায় একবার নববর্ষের সময়। ‘রবিকাকা’ শান্তিনিকেতন থেকে চিঠি লিখছেন তাঁর ‘প্রাণাধিকেষু’ ইন্দিরাকে। সন-তারিখ ১৩২৯-এর ২ বৈশাখ। ‘‘কল্যাণীয়াসু, নববর্ষের আশীর্ব্বাদ গ্রহণ করিস। শিলাইদা ঘুরে এলুম— পদ্মা তাকে পরিত্যাগ করেচে— তাই মনে হল বীণা আছে, তা’র তার নেই। তার না থাকুক, তবু অনেককালের অনেক গানের স্মৃতি আছে। ভাল লাগল, সেই সঙ্গে মনটা কেমন উদাস হল।...’’ বর্ষ শুরুর দিন, ডাকপিওন যদি এমন কোনও নববর্ষের চিঠি আপনাকে দিয়ে যায়, প্রথমটা খুব অবাক হবেন, তাই না! করোনা-ক্লান্ত এই নির্বাসনে অবশ্য কেউ এখন চিঠি দিতে …
চোপ, লকডাউন চলছে আবীর মুখোপাধ্যায় লেখাটা যখন লিখছি, আনন্দবাজার পত্রিকায় আমার প্রাক্তন সহকর্মী, এই বীরভূমেরই ছেলে রোহন ইসলামের ফেসবুক পেজে চোখ গেল। কী বিস্ফোরক তথ্য! এদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, ১ থেকে ১০০০-এ পৌঁছেছে ৮ সপ্তাহে। আর হাজার থেকে ২০০০-এ লাগল মাত্র ৪ দিন! ৯৬ ঘণ্টা! আর গোটা দেশে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৪১! রোহনের অঙ্কে ভুল হয়নি। ভুল আমাদের। ‘আমরা’ মানে— আমরা যারা রোজ সকাল হতেই, দাঁতে নিমকাঠি গুঁজে ঝোলা নিয়ে নানা অছিলায় বেরিয়ে পড়ছি পথে। ‘আমরা’ মানে প্রতিদিন যারা সব্জি, মিষ্টি, মাছের দোকানে লাইন দিচ্ছি। মানে, আমাদের তো রোজ …
আক্রান্ত বাড়ছে, মুজরো করছি আবীর মুখোপাধ্যায় নির্বাসনের জীবন শুরুতেই একটা আশঙ্কা করছিলাম, সপ্তাহ গড়াতেই সত্যি হল! টেলিফোনে কাকে যেন বলছিলামও আশঙ্কার কথা— বড় অস্থির, বড় অসহিষ্ণু এখন আমরা। শেষ পর্যন্ত পারব তো...। কাকে যেন বলেছিলাম...! পারছি আর কই! আসলে কোনও কিছুর মধ্যেই খুব বেশিদিন, বেশিক্ষণ থাকতে পারি না আমরা। সে সিনেমা হোক, গান হোক, বই হোক, রাজনীতি হোক, সম্পর্ক হোক, রাগ-দুঃখ-অভিমান-শোক-ভালবাসা হোক— কোনও কিছুই না। কারও সঙ্গেই খুব বেশিক্ষণ চোখে চোখ রেখে কথাও বলতে পারি না। ছবি রিলিজ হয়— সপ্তাহ পার হতেই ভুলে যাই আমরা। নতুন ট্রেলার হাতড়া…
গগনে এত আলো এমন ভাবে ‘এখন শান্তিনিকেতন’ পত্রিকার ই-ভার্সান শুরু করতে হবে— ভাবিনি! এমন মানে কেমন? এমন করে এমন— একটা টেবিল, দুটো চেয়ার, রাতারাতি বইওয়ালা বুক ক্যাফে বন্ধ করে রতনপল্লির অফিস থেকে বাড়িতে তুলে আনা একটা ডেস্কটপ, জরুরি পরিস্থিতির কথা বলে এক দুপুরে লাগানো নেট-কানেকশন নিয়ে দেড় দিনের লড়াই! নাগাড়ে, নির্ঘুম কাজ করতে গিয়ে বারংবার হোঁচট খেতে খেতে মনে পড়ে যাচ্ছিল ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিটে প্রথম চাকরি my.anandabazar.com-এর দিনগুলোর কথা। আর আমার তখনকার সিনিয়র সেবাব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। সেবাদা বলতেন— নতুন দিনের কথা, ডিজিটাল সময়ের কথা।…
আলোর পথে, অমৃতের পথে ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট থেকে রতনপল্লি— কর্মক্ষেত্র বদলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে, শান্তিনিকেতনে ফিরে মনে হল, একটা কাগজ হোক এখান থেকে। শিল্প-সাহিত্যের কাগজ। নিত্য বইওয়ালায় বসে ভাবি, কত প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকর এখনও শান্তিনিকেতনে! এখনও সুরে সুরে সুদূরে সন্ধেতারা ওঠে। হাওয়ায় হাওয়ায় এস্রাজি পকড়। রোদ-বৃষ্টি-জ্যোৎস্নায় ভিজে এখনও শান্তিনিকেতন ‘সব পেয়েছির দেশ।’ চতুর্দিকে যামিনী পটে জড়ানো স্মৃতি-পাঠ। উঠতে বসতে, সাহিত্যের দালানকোঠা, সাতমহল! ভেবে চলি, এখানে একটা কাগজ হোক। সবাইকে জুড়তে হবে সাহিত্যের সাত-সেলাইয়ে! প্রকাশক, প…
সংযোগ