রবিবার

আহার/ 

মৌমিতা পাল


সুপ খাব না দুধ খাব— তা নিয়ে ভাববার সময় এখন নয়। এই করোনার বন্দিদশায় যতটুকু যা মেলে, তাই আপাতত অমৃত!
সহজপাচ্য, সুস্বাদু রান্না বাঙালি বরাবরই জানে। চচ্চড়ি, ছ্যাঁচড়া খেয়ে বড়ো হওয়া বাঙালির এই প্রথম নববর্ষের উৎসব ঘরে বসে কেটেছে। ঘরের কিচেন গার্ডেনের আকাশমুখি লঙ্কা, রাঙা টমেটো, সুস্বাদু ধনেপাতা অনেকটাই ভরসা তবু। পার্কস্ট্রিটের ভোজনশালাগুলোতে গুনগুন শব্দ নীরব। রবিবারের সকালে আর কেউ ভাবে না আজ কচি পাঁঠা হবে নাকি ইলিশ মাছ! কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া বন্ধু আচমকা গত রাতে ফোন করল। কেউ কারুর সঙ্গে কথা বলতাম না বেশ বহু বছর। একসঙ্গে চৈত্র সেলের কেনাকাটা নিয়ে অনেকটা সময় গল্প করলাম দুজনেই। বসুপরিবারের গিন্নিমানুষ এখনও আমার হাতে বানানো চকোলেট ভোলেনি বুঝলাম। রবিবারের সকালে উনুনে কড়া চাপিয়ে কমা আঁচে তেল গরম করতে দিলাম। তাক থেকে নামালাম রোদে শুকিয়ে জমিয়ে রাখা কুচোনো বাঁধাকপি। এই বাঁধাকপি কুচিয়ে রোদে শুকিয়ে জমা করার রীতি বড়ো পুরোনো। এভাবে বহুদিন বাড়িতে বাঁধাকপি স্টক করা যায়। বড়ি দেওয়া বা আচার বানানোর মতোই এসব বেশ পুরোনো পন্থা, যা বাঙালি বহুদিন ধরে মেনে চলে আসছে অসময়ের জন্য সঞ্চয় করতে। ভিনিগারে ডুমো ডুমো করে কেটে ডুবোনো গাজর থেকে খানিক নিলাম। এভাবে গাজরও বহুদিন স্টক করা যায়। গাজরের টুকরোগুলো মিহি করে কুচোবো। আজ রাঁধব গাজর কুসুমালি ও ডাল চমৎকার। এই ডাল চমৎকার খাওয়া যায় ভাত ও রুটি— দুয়ের সঙ্গেই। ভাগ করে নিলাম রেসিপি। কেমন লাগছে ‘আহার’— জানাবেন আমাদের।

গাজর কুসুমালি 

উপকরণ: গাজর একটা (মিহি করে কুচানো), বাঁধাকপি খানিকটা (কুচানো), সরষে দানা (১ চা চামচ), হলুদ গুঁড়া (আধ চা চামচ), ধনেপাতা (১‌ কাপ কুচানো), নুন আন্দাজ মতো, ১টা লেবুর রস, লঙ্কা গুঁড়ো অল্প, তেল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালী: প্রথমেই বলি, বাজার থেকে আনা সব্জি খুব ভাল করে ধোবেন। ভিনিগার-জলে রেখে দিতে পারেন। এই করোনা পর্বে— সতর্ক হতেই হবে আমাদের। এ বার রান্না। কড়াতে তেল গরম করে তাতে সরষে ফোড়ন দিতে হবে। তারপর গাজর, বাঁধাকপি দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে কিছুক্ষণ। এরপর নুন, হলুদ গুঁড়া, লঙ্কা গুঁড়ো দিতে হবে। জল শুকিয়ে এলে লেবুর রস দিয়ে নামাতে হবে। ওপরে ধনেপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

ডাল চমৎকার

উপকরণ: রাজমা ১০০ গ্রাম, ছোলার ডাল ৫০ গ্রাম, খোসাসহ মুগ ডাল ২০ গ্রাম, পেঁয়াজ একটা কুচনো, টোম্যাটো ৪ টে, জিরে সিকি চা-চামচ, তেল, নুন।
প্রণালী: প্রেশারকুকারে ডালগুলি নিয়ে আঁচ কমিয়ে সেদ্ধ করুন। কড়াতে তেল গরম করে জিরে ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ লাল করে ভাজুন। টোম্যাটো দিয়ে আবার ভাজতে থাকুন যতক্ষণ না টোম্যাটো গলে যায়। ডাল এতে ঢেলে ফুটতে দিন। নুন দিয়ে আঁচ কমিয়ে ৩-৪ ঘন্টা ফোটান। এবার নামান। স্বাদু ও সহজে প্রস্তুত হওয়া এমন ঢের রান্নার রেসিপি জানাব আগামী রবিবারে। ভাল থাকুন সকলে। 

Post a Comment

0 Comments