দু’মলাটে সোমনাথ হোরের সাক্ষাৎকার এখন শান্তিনিকেতন ডেস্ক প্রকাশিত হল বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও রবীন্দ্রভবন গ্রন্থাগারের প্রাক্তন কর্মী স্বপনকুমার ঘোষের লেখা ‘সোমনাথ হোর : স্নেহ ও সান্নিধ্য’ শীর্ষক গ্রন্থ। প্রকাশক বইওয়ালা বুক ক্যাফে, রতনপল্লি, শান্তিনিকেতন। সম্প্রতি বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহের শান্তিদেব ঘোষ কক্ষে গ্রন্থ-প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বস্ত্র-কুটির ও হস্ত শিল্প মন্ত্রী শ্রীচন্দ্রনাথ সিংহ, বিশ্বভারতীর কলাভবনের অধ্যাপক সুতনু চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন অধ্যাপক কুন্তল রুদ্র এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী মানস ঘোষ। ম…
জেলের চিঠি, কবির ক্ষত অভিমণ্যু পাঠক বাদশাহ্ বাহাদুর শাহ্ জাফর তাঁর জীবন সায়াহ্নে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, জীবনে বাড়তি যে চারদিন ভিক্ষা করতে চেয়ে নিয়েছিলেন, দু’দিন হারিয়ে গেছিল আশায়-আশায়, আর বাকিটা অপেক্ষায়। আরও আশা আরও অপেক্ষাকে ডেকে আনে, প্রশ্রয় দেয়। যেখানে কাজ খুব বাঁধাধরা, নেই বললেই চলে, সেখানে সময় পিছলে যায়, হাতের আঙুলের ফাঁক গলে, চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। জেলের ভেতরের জীবনটা খানিকটা তেমনই। এমন করেই তাঁর জেলের স্মৃতিকথার বয়ানের ডালি সাজিয়েছেন, ভারভারা রাও তাঁর, ‘Captive Imagination: Letters from Prison’ বইয়ে। অন্যের মুখের ঝাল ন…
আমরা মনে রাখিনি কবিকে ঔষ্ণীক ঘোষ সোম মহালয়ার দিন জন্ম বলে নিজেকে মহালয়াজাতক বলতেন। আমুদে, খাদ্যরসিক এবং নিরহংকার মানুষটা যে নেই এখনও মেনে নিতে পারি না! তিনি আমার প্রণব জেঠু, কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়। বারবার মনে হয় এই তো সব ঠিক হয়ে গেলে আবার কোনও অনুষ্ঠানে দেখা হবে। কিংবা তাঁর ৩৭৫ যোধপুর পার্কের ফ্ল্যাটে কিছু দিনের মধ্যেই হানা দেব, আড্ডা হবে। তাছাড়া তাঁর বাড়িতে মাংস খাওয়ার নেমতন্নটাও তো বাকি রয়ে গেছে। এই সব ভাবতে ভাবতেই বুকের ভেতরটা খাঁ খাঁ করে ওঠে যখন হোয়াটস্যাপ খুলে দেখি তাঁর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল এপ্রিলের শেষে, তারপর দীর্ঘ নীরবতা, অন্ধক…
কবির জীবন : সৌম্য চক্রবর্তী দীপ শেখর চক্রবর্তী ‘‘স্থির হয়ে ওঠে মন, ঝড় আসে যত। ওদিকে দেহের মাটি ক্ষতবিক্ষত।’’ (ধ্যান) আমি জানি সৌম্য চক্রবর্তীকে আর কেউ খোঁজে না। কেন খোঁজে না? সৌম্য চক্রবর্তী কেন হারিয়ে গেল? শ্রাবণের বইপাড়ায় বন্ধু বই প্রকাশকের কাছে শুনি সৌম্য খুব কম বয়সে নিজেকে হারিয়ে দিয়েছে। কীভাবে হারিয়ে দিয়েছে তার কোনও খোঁজ পাই না। সৌম্যর অন্য বইগুলোর খোঁজ করতে করতে চষে ফেলি গোটা বইপাড়া। সৌম্যকে পাওয়া যায় না। আবার দীর্ঘ সময় কেটে যায়। একদিন এক বান্ধবীর মুখে শুনি সৌম্যর কথা। তাই? তুমি সৌম্যকে চিনতে? হ্যাঁ। কফি হাউসে বসে জীবনের কত কথা বলে যে…
আকাশ না কি গাঙিনী দীপ শেখর চক্রবর্তী ‘তোমাকে কল্পনা করি– তোমার প্রতিমা গড়ি ছায়া ও কন্ঠের প্রতিধ্বনি দিয়ে, বুকের ওপর হাত এনে বসাই মনের মতো মন সবুজ স্তনের তলে, দুধের ধারার মধ্যে, ধুক-ধুক শব্দের গভীরে।… ’ (অপরাজিতা) কিছু কিছু বইয়ের ভেতরে একটা প্রাণ থাকে। যেমন দুপুরবেলা ছাদে মেলে দেওয়া শাড়ি বাতাসে ওড়ে, যেমন ভোরবেলা মাঠের ভেতর গেলে দুটি পা ভিজিয়ে দেয় সোনালি শিশির তেমনই কিছু কিছু বই প্রাণের হয়ে ওঠে। তবে প্রশ্নটা হল, কীভাবে? সেলিম মল্লিকের ‘আকাশ না কি গাঙিনী’ পড়তে পড়তে সেইসব উত্তর দিতে পারি আমি। এক ফর্মার একটি সূক্ষ্ম শরীরের বই। এমন বইকে অনেকে বলে…
বিপন্নতা ও তার চারটি স্তম্ভ দীপ শেখর চক্রবর্তী ‘যদি আসার কোনো প্রস্তাব থাকে আসা থাকে যাওয়ার নিয়ম থেকে চলে যাওয়া থাকে একটিই রাস্তা,একটিই অপেক্ষা সেখানেও থেকে যায়…।’ স্বর্ণেন্দুকে আমার কখনও জানানো হবে না যে কেমন বিপন্নতায় আমি ওর এই বোধের কাছে আশ্রয় নিয়েছি। চার ফর্মার একটি কাগজিয়া মলাটের বই যা একদিন আমাকে খুঁজে নিয়েছিল। তারপর সেই বইয়ের কবিতাগুলোর মধ্যে আমি খুঁজেছি সন্ধেবেলার হারিয়ে যাওয়া একটা গান। মফঃস্বলের সন্ধেবেলাগুলোতে যেমন শঙ্খ বাজে, ধুনোর গন্ধ যেমন ভেতরে গিয়ে আমার অস্তিত্বকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করে এই বইয়ের কবিতাগ…
নজরুলের ভাষা বিপ্লব নিয়ে কিছুই বলা হয় না বই-বাহিকের কড়চা/ ২ মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বৈ শাখ যদি হয় রবীন্দ্রমাস তাহলে জ্যৈষ্ঠ নজরুলের। কিন্তু পশ্চিম বাংলার ক’জন মানুষই বা জানেন এগারোই জ্যৈষ্ঠ কবি নজরুল ইসলামের জন্মদিন? না, এরমধ্যে হিন্দু-মুসলমানের ব্যাপার-ট্যাপার কিছু নেই। এ স্রেফ রবীন্দ্রসূর্যে আড়াল হয়ে যাওয়া তারাদের ট্র্যাজেডি। তেরই আষাঢ় যে বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মদিন তারই বা খোঁজ রাখেন ক’জন? রবীন্দ্রনাথ এত ‘ইনডিভিচুয়াল’ হয়েও কী করে ‘পাবলিক’ হলেন, আর ‘পাবলিক-খ্যাত’ হয়েও কী করে অন্য অনেক সাহিত্যিকের জন্মদিনগুলো আড়াল হল তা নিয়ে একখানা চম…
আশ্রয়ের অভিজ্ঞান অরিজিৎ চক্রবর্তী কলকাতায় শীত আসে ধুনুরির ধনুকের টংকারে, উল বোনার কাঁটায়, হঠাৎ পাল্টে যাওয়া রোদ্দুরের রঙে, দিন ছোট হয়ে আসা রাতের নিবিড়তায়। দেবাশিস চন্দ’র লেখা ‘আশ্রয় এক আশ্চর্য ঠাট্টা’ নামের কাব্যগ্ৰন্থটিতে আমি কলকাতা খুঁজে পাচ্ছি। চিরকালের শীতের কলকাতা। পার্কস্ট্রিটে স্যান্তাক্লজ, নিউমার্কেটের শো-কেশে বাহারি পোশাকের সমারোহ, কেক-পেস্ট্রি-গ্ৰিটিংস কার্ডের হৈহৈ। আর এই হৈচৈ থেকে দূরে আশ্রয়হীন মানুষের ব্যথিত আর্তনাদ। বন্ধুহীন একা চলার বিধিবদ্ধ দিনলিপি। সরল ঐতিহ্যস্পর্শী উচ্চারণে প্রথাগত বাঁকবদলের পাথর ছড়ানো পথ…
বইওয়ালার রবিবার/ ৫ শেষ হয়ে হইল না শেষ আবীর মুখোপাধ্যায় ১৮৭৩-তে ‘বঙ্গদর্শন’-এ প্রকাশিত ‘মধুমতী’ কি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম ছোটগল্প? নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সাহিত্যে ছোটগল্প’-র ভিতর তা হলে তেমন করে বাংলা ছোটগল্পের কথা এল না কেন? সাহিত্যের ইতিহাসবেত্তারা কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেন, বাংলা সাহিত্যে এই নব-সাহিত্য ধারাটির জন্ম পাশ্চাত্য প্রভাবে। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পেও রয়েছে সেই প্রভাব। একটু পরের দিকে হলেও রূপ ও রীতি নিয়ে সেই অর্থে সে প্রভাব কাটিয়ে রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পই বাংলা সাহিত্যে প্রথম নিজস্বতায়, ‘প্রতীতির সমগ্রতা’-য় উত্তীর্ণ। ন্যা…
বইওয়ালার রবিবার/ ৪ মনোময় আশ্চর্য স্মৃতি-ছবি আবীর মুখোপাধ্যায় ‘স্মৃতির পটে জীবনের ছবি কে আঁকিয়া যায় জানি না। কিন্তু যেই আঁকুক সে ছবিই আঁকে’। যখনই ডাউন মেমোরি লেনে হাঁটার কথা শুনি, পড়ি; আমার মনে পড়ে যায় রবিঠাকুরের ‘জীবনস্মৃতি’-র এই সত্যভাষ। আসলে চিত্রকলা, শিল্প-সাহিত্যে, সিনেমায় বার বার দেখেছি স্রষ্টাকে স্মৃতির কাছে নতজানু হয়ে রেকাব পাততে। কিন্তু, কাজটা মোটেই সহজ নয়। পিছন পানে হাঁটতে হাঁটতে লেখাও সহজ নয়। বেশিরভাগ সময়, এলোপাথাড়ি স্মৃতিরা এসে ওলোট-পালট করে দেয় সব কিছু। ভেঙে যায় স্থিতধি চারণার গূঢ় শৃঙ্খলা। দু’ একটি লেখা বাদ দিলে যেটা হয়…
সাঁঝবিহানের মিশ্ররাগ জুলফিকার জিন্না বাংলার সঙ্গে বিহারের ছিল এক অবিচ্ছেদ্য নাড়ির যোগ। ভৌগোলিক নিবিড় সান্নিধ্যের কারণে সেই পাল যুগ থেকে বৃটিশ আমল পর্যন্ত বাংলা-বিহার ছিল একটি মিলিত শব্দবন্ধ। ১৭৩৩ সালে দিল্লির সম্রাট বিহারকে বাংলার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন এবং তার ফলে আলীবর্দী খাঁ যখন বাংলার নবাবের আসনে আসীন ছিলেন তখন থেকে বৃটিশ আমল পর্যন্ত বিহার ছিল বাংলার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পরবর্তী সময়ে ভৌগোলিক সীমান্তকরণে আপন স্বাতন্ত্র্যে বিহার ভাস্বর থাকলেও সেখানে বাঙালি সংস্কৃতির ধারাবাহিক চর্চা অব্যাহত থাকে। স্বাধীনতার পর ভারতে প্রথম জনগণনায় (১৯৫১) দ…
বইওয়ালার রবিবার/ ২ সে যুগের কেচ্ছা একালের ইতিহাস আবীর মুখোপাধ্যায় সে ছিল হুঁকো-খাওয়া সাহেব নবাব, জুড়ি-গাড়ি-চড়া রাজা-বাবুদের আমল। তখন ‘কুলীন ব্রাহ্মণ থেকে নৈয়ায়িক পণ্ডিতকে কেনা’ যেত। বাবু-বিবিদের এই কলকাতায় সমাজের উচ্চবিত্তরা ‘পরকালের জন্য পুণ্য সঞ্চয় করতে গিয়ে ইহকালের দেবতার মূর্তি চুরি করতেও দ্বিধা’ করত না। হুতোমের এই নক্সা-বাজ বাবুরা ‘নিজেদের মধ্যে অনেকেই পতিতালয়ে গমন করলেও বারাঙ্গনাপুত্র লেখাপড়া শিখতে চাইলে ‘গেল গেল রব’ তুলত। এই আঠারো-উনিশ শতকের ‘কেচ্ছা’ নিয়েই লেখক-সম্পাদক-বানান মনোযোগী সুবীর রায়চৌধুরীর গ্রন্থ ‘সে যুগের কেচ্ছা একা…
বইওয়ালার রবিবার/ ৩ করতলে এত রং, জামাল! আবীর মুখোপাধ্যায় এমন কখনও হয়নি! কখনও কোনও বই পড়তে গিয়ে, বই নিয়ে লিখতে গিয়ে কখনও এতো রঙ লাগেনি করতলে! দেখতে দেখতে সেই রঙে রাঙা হল মন। তবু রং যেন উদাসীন! বইটির নাম ‘জামাল’। ‘জামাল’ আদতে শিল্পী জামাল আহমেদের শিল্প-চর্চার একটি দুর্লভ সৃজন-সংগ্রহ। প্রতি প্রতি পৃষ্ঠায়, কাদাজল মাখা মানুষ-পশু-পাখি-ঘাসফুলের জন্য উদার অভ্যর্থনা। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ছবিতে ছবিতে ছয়লাপ। শতাধিক পৃষ্ঠার ‘জামাল’ যতো দেখি, আর দেখি অন্তর্চেতনের ভিতর এলোমেলো অপার নিসর্গ এসে দাঁড়ায়। ঠিক যেন নন্দলালের মতো মাটির বৈভবে পূর্ণ। কখনও …
হিরণদা আঁকেন না, আঁকে চারপাশ দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় হিরণ মিত্র। ঋত্বিক ঘটক নীচের ফ্রেমে যাঁর জন্য অমন ঈশ্বরের মতো তাকিয়ে আছেন। যেন বলছেন, ব্রহ্মাণ্ড পুড়ছে। সব পুড়ছে। লাল রক্তের ছিটে। গামলা ভর্তি রক্ত। শপিং মলে রক্ত। কল খুললে রক্ত। কফির কাপে রক্ত। ক্যানভাসে ক্যানভাসে, পত্রিকার প্রচ্ছদে প্রচ্ছদে, নাটকের মঞ্চে বা সিনেমার পর্দায়-বিগত দশকগুলি যিনি ধরে রাখলেন, ধরে রাখলেন, সাদাক-কালো বা লাল রেখায়-তিনি, আর কেউ নন, এক অভিশপ্ত মাইকেলেঞ্জেলো, যিনি প্রশ্ন করেন বারবার, জল জলের আদত মানে কি না! জানতে চান, জীবনব্যাপী অনুসন্ধানে তলিয়ে থেকে, লাল-নীল-সবু…
গ্রন্থনির্মাণ-সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ‘পূর্ববঙ্গে আমাদের বই প্রচারের কোনও বিশেষ উদ্যোগ নেই, পূর্ববঙ্গের প্রকাশকেরা নূতন উদ্যমে অন্তত প্রথমটা একটু চেষ্টা করবেন সন্দেহ নেই। সুবিধা এই যে, তাঁরা তোমাদের কাছে বিক্রির জন্য তো বই দেবেনই... তারপরে তাঁদের পূর্ববঙ্গের বাজারেও নানাদিক দিয়ে চেষ্টা করবেন। দুদিকেই বাজারটা পাওয়া যাবে।... একবার কালীমোহন অতি অল্পকালেই খুব সংকীর্ণ স্থানের মধ্যে আমার বিস্তর বই বিক্রি করে দিয়েছিল, তার থেকে আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে পূর্ববঙ্গে আমাদের field of operation করতে পার…
বিশ্বভারতীর প্রথম বই সুশোভন অধিকারী এই খবর আমরা সকলেই জানি যে, টিন-এজ রবীন্দ্রনাথের প্রথম কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছিল ১৮৭৮ সালে। হিসেব মতো তাঁর বয়স তখন সতেরো বছর। অবশ্য অঙ্কের হিসেব এখানে বড় কথা নয়, কথাটা ভিন্ন প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই। খেয়াল করলে দেখি, বেশ খানিকটা পিছিয়ে, রবীন্দ্রনাথের প্রথম বই প্রকাশের ঠিক একশো বছর আগে ১৭৭৮ সালে, প্রথম বাংলা হরফে বই ছাপা হয়েছে। সময়ের নিরিখে কিশোর রবির ‘কবি-কাহিনী’ যখন ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পাচ্ছে ঠিক সেই সময় পূর্ণ হচ্ছে বাংলা হরফে বই ছাপার একশো বছর। একশো বছরে ছাপাখানার অনেক বিবর্তন ঘটেছে, তা অবশ…
পড়তে পড়তে মগজে কারফিউ। নন্দিত-নিন্দিত নানা কথার দু’মলাট নিয়ে কী পড়ছি, কেন পড়ছি। পর্ব ১ সমীর এন্ড ইওনাটান দীয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ড্যানিয়েলা কারমি’র ‘সমীর এন্ড ইওনাটান’ হিব্রু ভাষায় প্রকাশিত হয় ১৯৯৭-এ। অনুবাদ হয়ে প্রকাশ পায় ২০০২ সালে। সমীর প্যালেস্টাইনবাসী। বাবা চুল কাটেন, মা এক দোকানের কর্মচারী। ইসরাইল-অধিকৃত প্যালেস্টাইনে তারা অর্থনৈতিক অভাবের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকে। গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। গুলি খেয়ে মারা যায় সমীরের ৫ বছর বয়সী ভাই। ইসরাইলি সৈন্য ভয়াবহ, অন্তত সমীর সেরকমই জানে। বেপরোয়া খুনে বিশ্বাসী ত…
গ্রন্থ সমালোচনা সমীরণ নন্দী ‘ঘুরে দ্যাখো কোলকাতা’ কৌশিক আকী’র ছবির বই। ছবি মানে ফোটোগ্রাফ আর সেটা সাদাকালো; চোখ টানবেই। এক চরম ভাবে জীবন্ত শহর কলকাতার বিভিন্ন খন্ড মুহুর্ত ধরেছেন কৌশিক তার মুঠোফোনে। সময়কাল নভেম্বর ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭-র কলকাতা। মোবাইল ফোনক্যামেরার এমন এক চমৎকার ব্যবহারে আনন্দ পেলাম, সাধারণভাবে যখন সবাই মোবাইল ফোনক্যামেরার ব্যবহার করেন শুধু সেলফি আর বন্ধুবান্ধবের ছবি তোলার জন্য, সাবজেক্টের প্রায় অজ্ঞাতসারেই ক্যামেরা ব্যবহার করে মূহুর্তকে বন্দি করার মধ্যে এক মুন্সিয়ানা আছে। মনে এসে যায় কার্তিয়ের ব্রাসোর কথা। সাদাকালো…
পুরানো বই, নতুন বই, হারিয়ে যাওয়া বই, প্রিয় বই, নানা সময়ের পড়া, পড়তে চাওয়া, ভুলে যাওয়া, মনে পড়ে যাওয়া বইয়ের কথা নিয়ে বই-বাহিকের কড়চা। আজ প্রথম কিস্তি। লিখছেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বই নিয়ে এই কাগজে কিস্তিতে কিস্তিতে লিখবার জন্য আমার কাছে আব্দার জানিয়েছেন আবীর। সে তো উত্তম প্রস্তাব। ব্যক্তিগতভাবে আমার ব্যসন বলতে তো ওই বই! পড়ুয়া হই আর না হই, ঝোলায় বই বইতে বইতে এখন নিজের জন্য ‘বই-বাহিক’ খেতাবটা অন্তত দাবি করতেই পারি! এতদিনের নাড়াঘাঁটায় এটুকু অন্তত বুঝতে পারি, কোন বই শুধু পাতা উলটে গেলেই চলে আর কোন বই আলাদা করে তাকে তুলে রাখতে হয়। তেমন তে…
সংযোগ