চিলাপাতায় দিনযাপন সুকন্যা দত্ত ‘‘গহন অরণ্যে আর বারবার একা যেতে সাধ হয় না- তবু যেতে হয় বারবার ফিরে যেতে হয়”.... অরণ্যের হাতছানি পেয়ে মন বাঁধা মানতে নারাজ। সবুজের আদিমতা, গহীন অরণ্যের রহস্যময়তা, বুনো ফুলের গন্ধ, নির্জনতা ভেদী পাখির কলতান প্রকৃতির কোলে বৈচিত্র্যের পটচিত্র রচনা করে। জঙ্গলের কাছে গেলে আমার হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়, বার বার। অরণ্য যত গভীর হয়, ততই তার রহস্যময়তা বাড়ে। নিবিড় অরণ্যে সূর্যের আলো অনেক কষ্টে পাতার চাঁদোয়া সরিয়ে মাটিকে ছুঁতে আসে, নতজানু হয় মাটির কাছে। জঙ্গলের শরীরে হাঁটতে হাঁটতেই শোনা যায় পাতার মর্মর ধ্বনি, লেখা হয় আরণ্যিক নোট…
সুন্দরী গ্রাম লেপচাখার পথে হোমাগ্নি ঘোষ ব ক্সা টাইগার রিজার্ভের মূল ফটকটা পেরোতেই শুরু হল ঘন শাল বনের সারি, তার সঙ্গে শুকনো পাতার ঝরে পড়ার নিঃশ্বাস, হটাৎ করে কানে এলো এক কর্কশ শব্দ, অটোর সামনের কাচ দিয়ে দেখলাম বাহারি পেখম তুলে উড়ে গেল একটা ময়ুর কিন্তু ওর কর্কশ শব্দটা মিশে গেল বনের মাধুর্যতার সঙ্গে। আমাদের গন্তব্য আলিপুরদুয়ার থেকে সান্তালাবারি দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার, রাস্তা মাঝে ভাগ হয়ে একটা চলে গেছে জয়ন্তীর পথে, আর আমরা তাকে পাশে রেখে লোয়ার বক্সা টাইগার রিজার্ভের সীমা বরাবর এগোতে লাগলাম পথে পড়তে লাগল রেস্ট হাউস, ছোট ছোট কাঠের বাড়ি তার মাঝে …
জলের উপত্যকা অমৃতা ভট্টাচার্য ডি মাপুর ছাড়িয়ে চলেছি। আমাদের গন্তব্য কোহিমা। ধুলো ওড়ানো সড়ক আর বিচ্ছিন্ন কিছু জনপদ পেরিয়ে পাহাড়ি রাস্তায় এসে পড়লাম। ওই নীচে দেখা যাচ্ছে সবুজ ধানের ক্ষেত। ধাপে ধাপে চাষাবাদ আর শান্ত নির্জন ঘরবসতি। নাগাল্যাণ্ডের মানুষ ইতিহাস আর রাজনীতির গন্ধ মেখেছে বারবার। বিচ্ছিন্নতার গল্প শুনতে শুনতে ওরা মাটি আর মানুষকেই আরও নিবিড় করে আকড়ে ধরেছে তাই। কোহিমার বাজারে ঘুরে বেড়ালে শাক, ফল, লতা, গুল্ম আর প্রাণীজ খাদ্য খাবারের পসরা দেখে মুগ্ধ হতে হয়। ওই নীচু রাস্তা ধরে উঠে আসছে যে মেয়েটি ওর গোলাপি গালে ঋজু, কঠিন এক সংগ্রামী জীবনের গন্…
প্রেমের পাহাড় তাওয়াং বর্ণালী রায় ‘‘এখন আমি একটা পাহাড় কিনতে চাই। সেই পাহাড়ের পায়ের কাছে থাকবে গহন অরণ্য, আমি সেই অরণ্য পার হয়ে যাব,...। ...একেবারে চূড়ায়, মাথার খুব কাছে আকাশ, নিচে বিপুলা পৃথিবী, চরাচরে তীব্র নির্জনতা।’’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর কলমের যাদুতে যে পাহাড় কিনতে চেয়েছিলেন, আমিও তেমন বারবার ফিরে যাই পাহাড়ের কাছে। কিনতে না পারি তার সৌন্দর্য আমাকে চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে যায়। সেইরকমই এক পাহাড় অরুণাচল। আজ কিন্তু আমারা অরুণাচলের একটু অন্যরকম গল্প শুনব। এ গল্প ভালোবাসার গল্প, এ গল্প দেশ প্রেমের গল্প। যে ভালোবাসার সৃজন…
খাদের ধারের রেলিংটা হোমাগ্নি ঘোষ প্রে সিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি ছিল কফিহাউস। কলকাতায় মানুষ হলেও আমার শৈশবের দীর্ঘ সময় কেটেছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা বাগানে, তিস্তা নদীর পাশে হটাৎ করে নাম না জানা প্রজাপতির সঙ্গে। পাহাড় জঙ্গলে অনেক সময় কাটালেও একটা জায়গা ছোটবেলা থেকে ভীষণ প্রিয় আর কাছের হয়ে গেল আমার কাছে, মন খারাপ হলেই আমি যার কাছে এখনও ছুটে ছুটে যাই, যার খাদের ধারের রেলিং বেয়ে আমি আজো আমার শৈশব খুঁজি, যেখানে গেলে আমার মনে হয় আমার বাবা আমাকে বলছে– জানিস বাবি এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। আজ আমার সেই দার্জিলিঙের ক…
পান্থ/ ২ ফুনশিলং-এ গোটা রাত দীপশেখর চক্রবর্তী ফু নশিলং এর পাহাড় থেকে পায়ে হেঁটে নেমে আসছি আমি, কল্যাণ এবং সায়ন। পাহাড়ের কোলে বৌদ্ধ গুম্ফাতে অন্ধকার নেমে আসা কাব্যিক ছিল। তবে এই অন্ধকার পাহাড়ের পথ দিয়ে নীচে নেমে আসা তার থেকেও বেশি সুন্দর। উল্টোদিক দিক থেকে আসা গাড়ির বিপদ এড়ানোর জন্য আমরা পাহাড়ের খাদের পাশ দিয়ে হাঁটছি। এমনিতে আমার উচ্চতার ভয় তবে এখন সেসব পাত্তা দিলে চলবে না। পাহাড়ে হেঁটে ওঠার পরিকল্পনাটা আমারই, ফেরার সময় যে কোনও গাড়ি পাবো না এটা বোঝা উচিৎ ছিল। তবে সেই ভুল নিয়ে এখন দুর্বল হলে ওরা দুজন বেশ ঘাবড়ে যাবে। আমার এই যে কোনও বি…
পান্থ/ ১ লেকের নাম খাঁদারানি সায়ন্তী দাস এ মন দিনে তারে বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়। এমন দিনে মন খোলা যায়— আর এমন দিন যদি কাটে এক পান্না সবুজ হ্রদের পাড়ে, যার চারপাশে সবুজের কোলাহল। রাশি রাশি অজানা পাখির শব্দমিছিল… সঙ্গে, যে প্রিয়। কেটে যায় বেলা, থাকে না কোনও অবেলা। হৃদয় পূর্ণ সুখস্মৃতিতে, পেয়ালা উপচানো সে মুহূর্তমালা। জেগে থাকে শুধু দুই ভবঘুরে হৃদয়ের অফুরান করতালি। খুব বেশি দূর নয়। কলকাতা থেকে আড়াই ঘণ্টার দূরত্ব। সকালের ইস্পাত এক্সপ্রেস-এ চেপে সোজা ঝাড়গ্রাম। তারপর হোটেলে ঢুকে একটু বিরাম নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যেতেই পারে বেলপাহাড়ির পথ…
পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রতি রবিবার শুরু হচ্ছে ট্রাভেলগ— ‘পান্থ’। লিখে পাঠান আপনার ভ্রমণ-অভিজ্ঞতা। সঙ্গে পরিবারের তোলা ছবি পাঠাতে ভুলবেন না। লেখা হতে হবে ঝরঝরে বাংলায়, অনধিক ৮০০ শব্দে। লেখা পাঠাবেন এই ইমেলে : ekhonsantiniketan@gmail.com
সংযোগ