অন্য দ্যুতক্রীড়া
গৌতম ভরদ্বাজ
দীর্ঘ সময় ধরে চলা খেলা শেষ হল।
ঈশ্বরের হার প্রায় নিশ্চিত হলে
দর্শকরা সনৈ সনৈ উঠে
আগেই চলে গেছে।
দ্যুতক্রীড়া মন্ডপ ফাঁকা।
পরাজিত ঈশ্বর মাথা নীচু
করে মণ্ডপে আসা যাওয়ার
মূল ফটকটি দিয়ে
আরও ফাঁকা তাঁর সাধের ভূখন্ডের
উত্তর মেরুর দিকে চলে গেলেন।
পৃথিবীর অগণিত বছরের
ইতিহাসে যেন প্রথম পারদের মতন
ভারী আঁধার নেমে এল।
শয়তান বিজয়ী—
ঘোষণা করার কেউ নেই।
বত্রিশ পাটি সাদা দাঁত রাগতঃ
রিক্ত মহাকাশ নৈঋতে
বিষন্ন-ভাসা চাঁদকে ভেংচায়।
আয়োজন উৎসব যত
ঈশ্বরের জন্য তোলা ছিল—
মন্দ বাতাস প্রভুকে জানালে
প্রাগৈতিহাসিক ঝঞ্ঝার মতো
শয়তানের হাসিতে যেন,
সব আলো নিভে গেল।
দম্ভ ছাড়িয়ে গেল পৃথ্বীর উচ্চতম
মিনারগুলির সমবেত উচ্চতা।
সকাল এসেছে, রাত শেষ হলে যেমন,
এসেছে নিয়মে।
মৃত্যুপুরীর মতো অচেনা
পরিত্যক্ত যেন রাজপথ।
কেউ নেই। জরুরি বার্তাবাহী কটি গাড়ি
ভ্যাবাচ্যাকা দু একটি ভিখিরি— শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ের দক্ষিণ
ফুটপাতে হতে পারে,
রোমে নিউইয়র্কে তেহরানে হতে পারে
যেন আধিদৈবিক প্রশ্নচিহ্ন চোখে এঁকে
আকাশের দিকে চেয়ে বসে আছে।
ক্রমশঃ মৃত্যুর গন্ধে চেতনার
গভীরে বিবমিষা।
ঈশ্বর স্বেচ্ছা নির্বাসনে। জনপদ ফাঁকা।
সে নষ্ট গন্ধ পথরোধে মানুষের মানুষ
থেকে এই প্রথম দূরে দূরে থাকা।
বিজয় সংবর্ধনা না পেলে নিশ্চিত,
শয়তান দ্যুতক্রীড়ায় মানুষকেই
আহ্বান জানাবে এবার।
সুযোগ পাওয়া যেতে পারে
নতুন করে অনেকটা সময়,
শয়তানকে পুনরায়োজিত খেলায়
হারাবার।
0 Comments