কবিতা

পুনরুত্থান

পৌষালী চক্রবর্তী


প্রেমিকের মৃত্যুগন্ধী দেহে চন্দন ছিটে দিই
নিকিয়ে তুলি তার অলিন্দ, নিলয়, বাতায়ন
মধুপর্কের পাত্রে।

পুনরুত্থান ঘটে যায়; আবার আকাঙ্ক্ষা করি
ডিঙ্গাখানি নিয়ে যাক সমুদ্রগর্ভে।
মৎস্যকন্যা আমি এক
উঠে বসি সুপ্রাচীন
কষ্টিপাথরের গাত্রে।

নীল জঙ্ঘা, বৃষস্কন্ধ, বাঁশিখানি পারিজাত কাঠ
এমন কৃষ্ণরূপে আমি মরি! প্রাণনাথ!

পাথর সচল হয়, উবু এক কচ্ছপের পীঠে
আমার যে সাধ যায় হ্লাদিনী রাধিকার
তুমিও বুঝেছ সার কতখানি ব্রহ্মান্ড বিস্তার।
তোমার কোলের নীচে মুগ্ধবোধ শিক্ষা করি
গরল অমিয়া ভেল, কষা স্বাদ মিঠে।
লগ্ন আসন্নপ্রায়, মধুপর্ক তুলে ধরি

কূর্ম অবতার!
ও আমার কূর্ম অবতার!


নিয়মতান্ত্রিক

তড়িৎ রায়চৌধুরী



ট্রেনে চাপলে ভাড়া দিতেই হয়
প্রয়োজন যখন আপনার বেশি
তখন দু’টাকা এক্সট্রা চাওয়াটাও অপরাধ নয়
সে আমি যার যত কোটি মকুব করি না কেন

মদও তো একটা প্রয়োজনীয় খাদ্য
আপনি খান না বলে
আমার আনন্দকে অস্বীকার করতে পারেন না
সে আমি যতই রেশনে চাল ডালের জন্য হুজ্জোতি করি।

কপ্টার থেকে পুষ্পবৃষ্টি
আপনার যতই অশালীন লাগুক
আমি তাতে থোড়াই কেয়ার করি
দেখুন তাজমহল বানানোর সময়
শাজাহানও গালি খেয়েছিল
কিছু কৃষক সম্রাটের সাহায্য পায়নি বলে

তারপর,তারপর—
ইতিহাস মনে রেখেছে তাজমহলকে।
ম্যানেজমেন্ট বলেছে, পরিষেবার মান
প্রদত্ত অর্থের সমানুপাতিক।
আর সমাজতত্ব মানে
নেশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে
জীবনে উৎসাহী করে।

তাহলে? তাহলে, এরপরেও কি বিশ্বাস করতে হবে
বিপর্যয় মানুষকে পাল্টে দেবে?
নাকি বন্দি-মুক্তি মহোৎসব
দ্বিগুণ বেগে ঝাঁপিয়ে পড়বে
উশুল করে নেবে
বকেয়া সব ভোগখণ।


মিমঙ্ক্ষা

সুজিত রেজ


ওড়না সরে যাওয়ার বাতাস আমার অঙ্গে মহুয়াসুর তোলে।
স্তনযুগের আলতো শোভায় ভালবাসা ঘন হয়ে ওঠে।
কাঁকতালের ফাঁকে আমার যাযাবর খিদে ঘুরপাক খায়।
চিরুনির দাঁড়ে উঠে আসে সময়ের নামতার শুভ্রকেশধ্বনি।
ঝুলন্ত স্বপ্নের মিথস্ক্রিয়ায় দুলতে থাকে বেলজিয়ম শার্সিসমুদ্র।
সন্ধ্যার জ্যোৎস্না মাখানো জুঁই মালা থেকে চুঁয়ে পড়ে অতুল মিমঙ্ক্ষা।
দুই ঊরুদেশে গিরিখাতের ঢল নেমে যায় জলজ সুরের সম্মোহনে।
সিগারেটের ধোঁয়ায় ঊরুভঙ্গের ইচ্ছে পাহাড়ি ঝরনার শব্দের মতো মিলিয়ে যায়।

Post a Comment

0 Comments