আহার

আহার/ ২

মৌমিতা পাল


রান্না সার্থক হয় রসনা তৃপ্ত হলে। একগাদা তেল মশলা দিলেই রান্না ভাল হবে এমন নয়। রান্না সুস্বাদু করতে গেলে পরিমিত উপকরণের প্রয়োগ বিষয়ে ধারণা থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও প্রয়োজন কিছু ছোট ছোট বিষয়ে সম্যক ধারণা। যেমন মাংস ম্যারিনেট করে রাখতে গেলে কখনই নুন দিয়ে রাখতে নেই আগে থেকে। রান্নার সময় তেলে অল্প নুন দিলে তেলের স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যায়, রান্নার তেল দ্রুত গরম হয়ে যায়। মা-ঠাকুমা-দিদিমার এসব ছোট ছোট পরামর্শ চিরকালীন। গল্প করতে বসে কেবলই খেই হারিয়ে যায়। একবার দীঘাতে ঘুরতে গিয়ে ওখানকার স্থানীয় রান্নার ঠাকুরের সঙ্গে গল্প জুড়ি। ঝোল ঘন করার অদ্ভুত টোটকা শিখি। ফুটতে থাকা ঝোলে বিস্কুটের গুঁড়ো দিলে এক পলকে ঝোল হবে ঘন। কিছুই ফেলনা নয়। বিস্কুটের কৌটৌর তলানিতে রয়ে যাওয়া গুঁড়োর ভূমিকা কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ ঝোল ঘন করার ক্ষেত্রে। এসব ভাবতে ভাবতে তেঁতুলের কাচের শিশি হাতে তুলে নিলাম। আজ ‘আহার’-এ বানাব মাংসের চাটনি ও চাল-ডাল-সাবু দিয়ে বানানো এক অন্য রকমের পায়েস। সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম রেসিপি।

মাংসের চাটনি

উপকরণ: কুচোনো মাংস-৫০০ গ্রাম। পেঁয়াজ-৮টি। বড় সাইজের আলু-১টা। কাঁচা লঙ্কা- ৬টি। পাকা তেঁতুলের ছোট গুলি-১টি। সরষে গুঁড়ো-১/২ চা চামচ। ঘি ও চিনি - ১ টেবল চামচ‌ করে। নুন- আন্দাজ মতো।
প্রণালী: একটু জলে তেঁতুল গুলে কাথ বার করে নিতে হবে। কাথে চিনি মিশিয়ে রাখতে হবে। পেঁয়াজ ছাড়িয়ে কুচিয়ে নিতে হবে, আলু চার টুকরো করে কাটতে হবে। কাঁচা লঙ্কা চিরে নিতে হবে। একটি ডেকচিতে ঘি দিয়ে তাতে মাংস, আলু পেঁয়াজ ও কাঁচা লঙ্কা সব এক সঙ্গে আঁচে বসিয়ে রাখতে হবে।
নুন সরষে গুঁড়ো দিতে হবে। ফুটন্ত জল ঢেলে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। মাংস নরম হলে ওপর থেকে তেঁতুলের চাটনি ঢেলে আর ও পাঁচ মিনিট আঁচে বসিয়ে রাখতে হবে।

কুট্টপায়সম্

উপকরণ: আতপ চাল- ১ কাপ, ছোলার ডাল- আধ কাপ, সাবু- ২ টেবল চামচ, আদাবাটা- ১চা চামচ, জিরে গুঁড়ো- ১ চা চামচ, ঘি- ১ চা চামচ, নারকেলের দুধ- ৪ কাপ, গুড়- প্রয়োজন মতো।
প্রণালী: প্রথমে ছোলার ডাল শুকনো খোলায় অল্প ভেজে নিন। এবার চাল, ডাল ও নারকেলের দুধ একসঙ্গে ফোটান। সেদ্ধ হয়ে গেলে সাবু দিন। সব সেদ্ধ হয়ে গেলে গুড় দিন। অন্য পাত্রে ঘি গরম করে আদা বাটা ও জিরে গুঁড়া দিয়ে একটু নেড়ে পায়েসের ওপর দিয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল কুট্টপায়সম্। 

Post a Comment

0 Comments