কবিতা

কোয়ারান্টাইন

মীরা মুখোপাধ্যায়


জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে দূরে
দেখা যাচ্ছে তার নীল বিশাল মাস্তুল
ঢেউ তাকে দোলাচ্ছে, ভোলাচ্ছে
শোনাচ্ছে জাহাজী কেচ্ছাও
এই তো আর কটা দিন, তারপরই

বন্দর এত কাছে তবু এত দূর
এখানে যে তার বাড়ি...
পপলার গাছের নীচে বৌ বাচ্চা

চল্লিশ চাঁদের পর নোঙর তোলার কথা
ফেরা হবে! ঢেউ কোনও কথা বলছে না


সে যে একলা পাগল খুঁজে বেড়ায়

সায়ন্তী দাস


আমাদের এই দাঁড়ি, কমাসর্বস্ব
আর কপি কাটাকুটিজীবন ছেড়ে
এক নিটোল সূর্যাস্ত দিলাম

তোমায়।...

ভ্রম কিছু ধরব না আর,
বর্তমানে সুর মায়াজাল—
আর তুমিই বিভ্রম।

শুধু কবিতার জন্য অমরত্ব খুঁজতে
খুঁজতে এ কোথায় এলাম...


বৃষ্টি-বিলাস

তড়িৎ রায়চৌধুরী


সে যাত্রাপথে বৃষ্টি-বিলাসী হাওয়া
ছলনা ছড়ায় সজনীর সজলতা।

দল বেঁধে আসা মুহূর্ত-মুখ প্রশ্রয়ী ব্যাকুলতা
আমি তো তুচ্ছ দেবতাও জানে কি তীব্র লীলাখেলা।

আমাদের হাঁটাপথে জলে ভিজে জুতো নষ্ট হয়
মাথার উপরে ছাতা তবুও পোশাক ভিজে যায়।

অনিবার্য ভ্রষ্ট নেশা নষ্ট কথা বলে
আলুথালু ক্ষণানন্দ আমরা মেখেছি ঠোঁটে গালে

জলের আদরে শাড়ি সরে গেছে ছন্দ অলংকার;
অমন করে কি হেসে ওঠে মেয়ে ভয় নেই হারাবার?


বাতিল চিঠির ভিড়ে

পৌষালী চক্রবর্তী


ছাতিম স্পর্শ ছাড়া আর কোনও প্রিয় ফুল নেই আজ
আমাদের মাঝে।
ছিল না কি কোনওদিন? অনর্গল রাত্রি, স্নান
লাজনম্র সাঁঝে।
সঞ্চয় চাকার তলে, একই চিঠি লিখি
অতিজীর্ণ ভূর্জপত্রে বিনয় ও ঈশ্বরী।


জাতিস্মর

সুমন চট্টোপাধ্যায় 


স্বপ্নের মৃত্যু হয় ঠিক মধ্যরাতে, তারপর কিছুক্ষণ
আমি পংক্তিবিহীন এক ঘোরে ছুঁয়ে যাই গান্ধারী
রাত্রির ছায়া, বুকের মুকুল
জানালার কাছে কিছু জ্যোৎস্নার ফুল পড়ে আছে
     
অনুভবে বেঁচে থাকা, মুখোমুখি নিরূপের সাথে
ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে কোনও বিনিময়, কথোপকথন
ফুরোবে না, এমন মায়ায়
শিয়রের কাছে কেউ কায়াহীন রাত জেগে আছে

আরেক জনম থেকে সমর্পিত তনু, তিল-তুলসীর সাজে
স্মৃতির রেকাবে রাখে হৃদির চন্দন...



Post a Comment

0 Comments