রবিবার


আহারে/ ৭

মৌমিতা পাল

খাদ্যবিলাসীর শহর কলকাতা। খাদ্যের নানান ধরণ সে যেমন দ্রুত রপ্ত করেছে, ঠিক তেমনি রপ্ত করেছে নানান যন্ত্র ব্যবহার করে রান্না করার অভ্যেস। তাই চাকুরিরতা নারী-পুরুষ গ্যাস ইনডাকশন বা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে দ্রুত সেরে ফেলে রান্না। ওটিজি মানেই কেক- কাবাব আর মাইক্রোওয়েভ মানে খাবার গরম করা বা ডিফ্রস্ট করার যন্ত্র, এমন কখনোই নয়। একসময় কলকাতাতে মাইক্রোওভেনে রান্নার ক্লাস করত অনেকেই, যন্ত্রটি কিনে ব্যবহার করার সুবিধার্থে। কিন্তু এখন অধিকাংশই এ বিষয়ে বেশ অনেকটা দক্ষ। এক্ষেত্রে মূলত মাথায় রাখতে হয়— মাইক্রোওয়েভের গঠন, সহায়ক পাত্র ও সরঞ্জাম, মাইক্রোওয়েভের কিছু বিশেষ নিয়ম, পাওয়ার সেটিং তথা মোডের নিয়ম, নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মাবলী এবং অবশ্যই রান্নার ধরণ বা বিশেষত্ব অনুযায়ী নিয়মের প্রয়োগ। যেমন পাঁউরুটি বেক করার সময় একটি পাত্রে অল্প জল রেখে দিলে, রান্নাটি পুরো ড্রাই হয়ে যায় না। হাড়যুক্ত মাংস, হাড়ছাড়া মাংসের তুলনায় দ্রুত রান্না হয়ে যায়। স্নেহসমন্বিত খাবারে এক্সট্রা অয়েল ব্রাশ একাধিকবার না করলেও চলে। মাইক্রোওয়েভে রান্নার এমন অনেক নিয়ম বা টিপস আছে যা এই সংখ্যায় কিছুটা বললেও, পরের সংখ্যাতেও ক্রমশ জানাব। আজ রইল মাইক্রোওয়েভে করা আমিষ নিরামিষ দুটি রান্নার রেসিপি।

মুরগি রসোল্লা

উপকরণ: মুরগি ৮ টুকরো, পেঁয়াজ বাটা ৫০ গ্ৰাম, রসুন বাটা ৩০ গ্ৰাম, লাল লঙ্কা গুঁড়ো ১৫ গ্ৰাম, কাজুবাদাম বাটা ৩০ গ্ৰাম, ঘি ৩০ গ্ৰাম, দই ১০০ গ্ৰাম, নুন আর চিনি স্বাদমতো, পাঁচ-ছ টা কাঁচা লঙ্কা লম্বালম্বি চিরে নিন।
প্রণালী: মুরগির টুকরোগুলো কাঁটা দিয়ে ফুটো করে নিন। এতে মশলা তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢুকবে। এরপর নুন আর অর্ধেক রসুন বাটা মাখিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। অন্য একটা পাত্রে অন্য সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। এ বার ওই মিশ্রণে মুরগির টুকরোগুলো দিয়ে দিন ১৫ মিনিট রেখে মাইক্রোওয়েভে মাঝারি আঁচে পনেরো মিনিট রান্না করুন। এর মধ্যে টমেটো পিউরি, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো আর লাল লঙ্কা মিশিয়ে একটা থালা চাপা দিয়ে ৩ মিনিটের জন্য মাইক্রোওয়েভে রেখে দিন। মাঝে মাঝে নাড়ুন। এরপর পেঁয়াজ, আদা আর রসুন বাটা দিয়ে আবার ৩ মিনিটের জন্য মাইক্রোওয়েভে রাখার পর জল আর মাংস দিয়ে আরও ১৫ মিনিটের জন্য রাখুন। মাঝে মাঝে নাড়ুন। নুন ও গরম মশলা দিয়ে ৪ মিনিটের জন্য রেখে গরমাগরম পরিবেশন করুন।

বেকড ফুলকপি

উপকরণ: বড় ফুলকপি ১ টি, সিদ্ধ ডিম ২ টি (কুচানো) বাদাম তেল ২ বড় চামচ, মাখন ২৫ গ্ৰাম, ময়দা ২৫ গ্ৰাম, দুধ ৩০০ মিলি লিটার, চিজ ৭৫ গ্ৰাম, শসা কুচানো দেড় বড় চামচ, নুন ও মরিচ গুঁড়া আন্দাজ মতো।
প্রণালী: কপিটা নুন জলে অল্প সেদ্ধ করে নিন। জল থেকে তুলে চামচের সাহায্যে সাবধানে কপির মাঝখানের অংশটি কুড়িয়ে তুলে, একটা আভেন প্রুফ পাত্রে কপিটা সোজা করে বসিয়ে রাখুন। একটা সসপ্যানে তেল গরম করে মাখন দিন। গলে গেলে ময়দা দিয়ে একটু নেড়ে, দুধ ঢেলে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না গাঢ় সস তৈরি হয়। ওই সসে খানিকটা নুন, মরিচ ও বেশির ভাগ কুচানো শশা, কুড়ানো কপি, অল্প পার্সলে, কুচানো ডিম এই সসে মিশিয়ে মিশ্রণটি কপির মাঝখানে ঢেলে দিন ও বাকিটা চারপাশে ছড়িয়ে দিন। বাকি চিজ ও পার্সলে উপরে ছড়িয়ে আভেনে ২০০ সেন্টগ্ৰেডে ৫-৭ মিনিট বেক করুন, খেয়াল রাখবেন উপরটা সামান্য বাদামী রং যেন হয়। বের করে গরম গরম পরিবেশন করুন।

Post a Comment

0 Comments