স্পর্শদোষের জীবনে ফিরতে চাই


স্পর্শদোষের জীবনে ফিরতে চাই

পৌষালী চক্রবর্তী 

চতুর্দিকে অস্বস্তিকর এক নীরবতা। তার মধ্যে আমাদের রাত ভোর হয়, দুপুর গড়িয়ে যায় মধ্যযাম এ। অতিমারির গ্রাস ব্যপ্ত করেছে সমগ্র চরাচর। এই সামূহিক নীরবতার মধ্যে অচেনা লাগে নিজেকে, নিজের হাত পা, নাসাগ্র, সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। অচেনা লাগে নিকটের মানুষটিকেও। গলার কাছে দলা পাকিয়ে ওঠে কেমন এক বোবা কষ্ট। শ্বাসবায়ু নিংড়ে ফেটে বেরতে চায় কবেকার চাপা পড়া বোবা কান্না।

এখন জীবন চাল, ডাল, ওষুধ বিষাদের। সকাল থেকে উঠে জীবনকে গতানুগতিকতায় ঠেলে নিয়ে যাওয়া। ঝাড়পোছ করতে গিয়ে চেনা ঘরের কোণকে অচেনা মনে হয়। পর্দার কোণে যে ছায়া পড়ে তা দেখে ছমছমে ভয় লাগে। ঘরের মধ্যে এ কাকে নিয়ে বসত? পরত খুলে যায় নিজের মধ্যে। বেরিয়ে আসে অচেনা আদলের দাঁত, নখ। পাশপাশি থাকা মানুষকে অপ্রত্যাশিত আক্রমণ।

মেঘ জমে। বিষাদ মেঘ এসে জমে জানলার শার্সিতে। তার জলকণা নিয়ে বানানোর চেষ্টা করি দার্জিলিংটি। গাঢ় বাদামি বর্ণের লিকার জমে বেসিনের নীচে। কলিং বেল বহুকাল নীরব। বারান্দায় চড়ুই টুনটুনি ফেরে। জমা খরচের সিঁড়িভাঙ্গা অঙ্ক মেলাতে বসে দেখি আয়ুরেখা অস্পষ্ট। আর অনন্ত প্রতীক্ষায় থাকি প্রাণবায়ু ও প্রেম নামের দুই অগাধ স্রোতস্বিণীর। আমরা যে স্পর্শদোষের জীবনে ফিরতে চাই।



Post a Comment

0 Comments