বন্ধুদাদার চিঠি সেদিন আনন্দ পাঠশালার পাশের রাস্তা দিয়ে স্কুটি চালিয়ে যেতে যেতে একবার দেহলি বাড়িটার দিকে তাকালাম। একা নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে সে। ওকে দেখে আর এগোতে পারলাম না। দাঁড়িয়ে গেলাম। দোতলার ছোট্ট খোলা ছাদের কার্নিশে অল্প অল্প শ্যাওলার আস্তরণ। কয়েকদিনের ক্রমাগত বৃষ্টির ফল। সামনে ছোটদের খেলার মাঠটায় বড় বড় ঘাস জন্মে প্রায় জঙ্গুলে ঝোঁপের আকার নিয়েছে। সবদিক নিস্তব্ধ। এ এক আশ্চর্য নীরবতার কাল। অপার শান্তি বিরাজ করছে আজ চার মাস ধরে আশ্রম প্রাঙ্গণে। এ কাল বড় বিভীষিকার। অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে আর কতদিন এই শান্তি বিরাজ করবে আশ্রমে, এই আনন্দ …
বন্ধুদাদার চিঠি করোনাকালের এই সুদীর্ঘ সময়ে আমার ছোট্ট বন্ধুরা যে কতটা মনমরা হয়ে বাড়িতে বসে আছো, তা আমরা ভীষণ ভাবে বুঝতে পারি। তোমাদের মধ্যে যারা একটু বড়, পৃথিবীর এই সংকটময় পরিস্থিতির কথা বুঝছো, জানছো তারা বাড়িতে বসে বসে অনলাইন পড়াশোনার পাশাপাশি নানার সৃষ্টিশীল কাজে লিপ্ত থাকতে পারছো। যারা সংস্কৃতিমূলক অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমেই অংশগ্রহণ করছো, যারা ছবি আঁকছো, গল্প লিখছো, আরও কত কি করছো, তাদের প্রত্যেকেকে আমাদের অকুন্ঠ অভিনন্দন আর কুর্নিশ জানাই। তোমাদেরই এক বন্ধু আলিপুরদুয়ার শহরের ক্লাস ফাইভের ছাত্র অনুব্রত সরকার পর পর কয়েকটি অ্যাপ তৈরি…
বন্ধু-দাদার চিঠি ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা... মনে মনে...’ সত্যি বন্ধুরা, গৃহবন্দিত্বের এইকালে আমাদের মনে মনেই হারিয়ে থাকতে হবে। কল্পনার জাল বুনে নতুন নতুন সৃষ্টিকে তুলে ধরতে হবে একে অপরের কাছে এই ইন্টারনেটের মধ্যে দিয়েই। কী করব বলো, মাসের পর মাস যে আমাদের ইস্কুলে যাওয়া নেই, পড়া নেই, খেলা নেই। নাচ-গান, অনুষ্ঠান কিচ্ছু নেই... কিচ্ছু নেই। সরাসরি মাস্টারমশাইদের কাছে শাসন, আদর কোনওটাই সে ভাবে নেই। বন্ধুদের মধ্যে এন্তার মজার সময়গুলো, গ্রীষ্মের ছুটির আগে গাছ থেকে কাঁচা মিঠে আম পেড়ে জমানো, বর্ষা এলে অকারণে ভিজতে গিয়ে দিদিমনির বকুনি... কি…
বন্ধু-দাদার চিঠি প্রিয় ছোট্ট বন্ধুরা, অনেকদিন তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। কি ভাবেই বা হবে, বলো? আমরা তো সবাই সেই মার্চ মাস থেকে গৃহবন্দি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে। পৃথিবী থেকে যেন খুব শিগগির এই ভয়ানক সংক্রামক ভাইরাসটি বিদায় নেয়, সেই চেষ্টায় দিনরাত লড়াই চালাচ্ছেন পৃথিবীর তাবৎ বিজ্ঞানীরা। তাঁদের কাজের দিকে মুখিয়ে বসে আছি নিরুপায় আমরা। আমাদের পড়াশুনো, লেখালেখি, খেলাধুলো, গানবাজনা, সবকিছুই এখন নেটনির্ভর হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে থেকে আমাদেরও মানসিকভাবে শক্ত থাকা প্রয়োজন। কোনও কাজ থামিয়ে রাখলে আমাদের চলবে না, তাই না? তাই অন্যভাবেই হোক…
স্মৃতির জলে স্নান রিম্পি পাঠভবন ছেড়ে এসেছি বহুকাল, তবু এখনও শুকনো পাতাবাদামের মতো উড়ে আসে দু চারটে স্মৃতি! হাতের মুঠোয় লেগে থাকে তার ধুলো ধুলো গন্ধ। আসনের সুতোয় ভাঙা পাতাবাদাম আটকে যাওয়ার মতো এ সুখস্মৃতি আটকে রাখি মনে। তবু মেনে নিতে হয়, তাড়াহুড়োয় কাঠবিড়ালির এগাছ থেকে ওগাছ ছুটে যাওয়ার মুহূর্তগুলো আজ অতীত। জানতে ইচ্ছে হয়, গাছপালাগুলো ভাল আছে তো? সন্তোষালয়ের পিছনের নাগকেশর, ঘন্টাতলার বট, লাইব্রেরীর পিছনের অশোকগাছ, কতটা বয়স হল ওদের! মনে মনে কেউ উত্তর দেয়, একচুলও বাড়েনি ওরা। যাদের ছায়ায় আমরা বকুল বীজের বাঁশি বাজিয়েছি, যার নিচে আমরা এঁকেছি …
সংযোগ