যারা কখনও কবিতা লিখতো মৈনাক বিশ্বাস কী গভীর অন্ধকার! ‘‘The horror! The horror!’’ না! এ সেই অন্ধকার নয়! এখানে কুর্টজ নেই। এখানে আছে একদল ছেলে। যারা বাসস্ট্যাণ্ডে, স্টেশনে বসে চা খেত, আড্ডা দিত। ঘরের চেয়ে বাইরে কাটাতো সময় বেশি। আত্মীয় স্বজনের থেকে দূরে থাকত ভয়ে। শুধু একটি প্রশ্নের ভয়ে: “কী করছ এখন?” ইংরেজী ‘quarantine’ এর বাংলা অর্থ গুগল ট্রান্সলেটর বলে ‘পৃথকীকরণ’ (এর অন্য কোনও প্রতিশব্দ দিল না কেন্ জানি না)। আর ‘exile’ হল ‘নির্বাসন’। সেই কোন কাল থেকে মূলত রাজনৈতিক কারণেই কাউকে নির্বাসিত করা হত। আর সেই নির্বাসন কখনও কখনও ডেকে আনতো মৃত্যু। আবার…
বন্ধুদাদার চিঠি গত পরশু ছিল বাইশে শ্রাবণ। কবিগুরুর চলে যাওয়ার দিন। কিন্তু শান্তিনিকেতনে সেই দিনটিতে নতুন প্রাণের আহ্বান জানাতে রোপণ করা হয় নতুন বৃক্ষের চারা। সেই অনুষ্ঠান ঘিরে যে উৎসব, যে নান্দনিকতা, তা বিশ্বের কাছে একটি দৃষ্টান্ত। আমরা প্রতি বছর হৈ হৈ করে এই ‘বৃক্ষরোপণ’ উৎসব পালন করে এসেছি। এই অভিনব উৎসবের আয়োজনকে অনুসরণ করে বিশ্বভারতী ছাড়াও আরও বহু শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণের উৎসব পালিত হয়। এ বছর আমরা দুঃসময়ের মাঝে বাস করছি। এই আতঙ্ক আর ভয়ের আবহে বৃক্ষরোপণ উৎসব কোথাও তাই সে ভাবে পালন করা যায়নি। কোথাও নিয়মরক্ষায় কয়েকজন মানুষ …
জলের উপত্যকা অমৃতা ভট্টাচার্য ডি মাপুর ছাড়িয়ে চলেছি। আমাদের গন্তব্য কোহিমা। ধুলো ওড়ানো সড়ক আর বিচ্ছিন্ন কিছু জনপদ পেরিয়ে পাহাড়ি রাস্তায় এসে পড়লাম। ওই নীচে দেখা যাচ্ছে সবুজ ধানের ক্ষেত। ধাপে ধাপে চাষাবাদ আর শান্ত নির্জন ঘরবসতি। নাগাল্যাণ্ডের মানুষ ইতিহাস আর রাজনীতির গন্ধ মেখেছে বারবার। বিচ্ছিন্নতার গল্প শুনতে শুনতে ওরা মাটি আর মানুষকেই আরও নিবিড় করে আকড়ে ধরেছে তাই। কোহিমার বাজারে ঘুরে বেড়ালে শাক, ফল, লতা, গুল্ম আর প্রাণীজ খাদ্য খাবারের পসরা দেখে মুগ্ধ হতে হয়। ওই নীচু রাস্তা ধরে উঠে আসছে যে মেয়েটি ওর গোলাপি গালে ঋজু, কঠিন এক সংগ্রামী জীবনের গন্…
দমবন্ধ হয়ে আসছে, মুক্তি চাই মালবিকা সেনগুপ্ত ১৩ মার্চ স্কুলের সভা। তখনও মনে হয় ওই সভাকক্ষের কেউই জানতেন না আমাদের সকলের ভবিষ্যত কোন্ অন্ধকারের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। তারপরের দিন রবিবার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমতো দেশজুড়ে জনতা কার্ফু। সবাই ঘরে থাকবেন। তাহলে ভাইরাসের চেন ভেঙে যাবে। এবং আমরা ভাইরাসকে কব্জা করতে পারব। আমরা সবাই তাই করলাম। ভেবেছিলাম—, দেখো, আমেরিকা, ইতালি, স্পেন তোমরা যা পারলে না, আমরা ভারতীয়রা কেমন সহজেই করোনাকে জব্দ করলাম! নিজেদের জন্য বেশ গর্ব বোধ করছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি খুঁজে বের করেছিলাম। কিন্তু…
বন্ধুদাদার চিঠি সেদিন আনন্দ পাঠশালার পাশের রাস্তা দিয়ে স্কুটি চালিয়ে যেতে যেতে একবার দেহলি বাড়িটার দিকে তাকালাম। একা নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে সে। ওকে দেখে আর এগোতে পারলাম না। দাঁড়িয়ে গেলাম। দোতলার ছোট্ট খোলা ছাদের কার্নিশে অল্প অল্প শ্যাওলার আস্তরণ। কয়েকদিনের ক্রমাগত বৃষ্টির ফল। সামনে ছোটদের খেলার মাঠটায় বড় বড় ঘাস জন্মে প্রায় জঙ্গুলে ঝোঁপের আকার নিয়েছে। সবদিক নিস্তব্ধ। এ এক আশ্চর্য নীরবতার কাল। অপার শান্তি বিরাজ করছে আজ চার মাস ধরে আশ্রম প্রাঙ্গণে। এ কাল বড় বিভীষিকার। অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে আর কতদিন এই শান্তি বিরাজ করবে আশ্রমে, এই আনন্দ …
সংযোগ